
।।আরিয়ান খান, কক্সবাজার।।
মহেশখালী চ্যানেল দিয়ে প্রতিদিন মিয়ানমারে শতশত ড্রাম অকটেন ও পেট্রোল পাচার হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩টি তেল বোঝাই ট্রলার মিয়ানমার যাচ্ছে এমন তথ্য দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এসব তেলের বিনিময়ে আনা হচ্ছে ইয়াবা, অস্ত্র ও গরু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহেশখালীর জামিরার খাল ও কালারমারছড়া খালকে তেল পাচারের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করছে পাচারকারীরা।
বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত লবণ চাষীরা জানিয়েছেন, দিনদুপুরে পিকআপ নিয়ে এনে ট্রলারে উঠানো হয় তেলের ড্রাম। এসব তেল পাচারে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী জড়িত। গত সপ্তাহে কিছু তেল স্থানীয় লোকজন লুটপাট করেছে।
ভরাখালী ঘোনার লবণ শ্রমিক আমান উল্লাহ জানিয়েছেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারী দুইটি ট্রলারে তেল বোঝাই করা হয়েছে। তেলের বিনিময়ে ইতোমধ্যে প্রায় দেড়শ গরু এনেছে পাচারকারীরা। এছাড়া ইয়াবা ও অস্ত্রও এনেছে। ট্রলারগুলি অস্ত্রধারীরা পাহারা দেওয়ায় ভয়ে কেউ বলতে সাহস করে না। আমরা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালে তারা মহেশখালী থানার ওসিকে জানান। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।
পার্শ্ববর্তী কালাপাড়া ঘোনার পরিচালক মনজুর আলম জানিয়েছেন, প্রকাশ্যে এভাবে তেল পাচারের কারণে আমরা উদ্বিগ্ন। অস্ত্রধারীরা নিয়মিত আনোগোনা করায় প্রজেক্ট থেকে শ্রমিকরা পালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করলে চোরচালান আরো বেড়ে যেতে পারে। কারা এই চোরাচালানে জড়িত সবাই জানে। অথচ পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেনা।
জানা যায়, মিয়ানমারে জাতিগত সংঘর্ষের কারণে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে তেল নেওয়া শুরু করেছে সঙ্ঘবদ্ধ চক্র। এদিকে তেলের বিনিময়ে গরু ও ইয়াবা আনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ইয়াবা আসায় এখন অনেকেই ইয়াবা ব্যবসায় নেমে পড়েছেন। ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে কেনা হচ্ছে অস্ত্র।
কালারমার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু আহমদ জানিয়েছেন, তেল পাচারের বিষয়টি সত্য। বিষয়টি ইতোমধ্যে মহেশখালী থানাকে অবহিত করা হয়েছে। কোন স্থান দিয়ে তেল পাচার হচ্ছে তাও বলা হয়েছে। তবে এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি প্রশাসন।
মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন বিষয়টি অবহিত করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।