

দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি।।
পার্বত্য খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের মনাজয় কার্বারী পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্পদ ত্রিপুরা (৮০) অগ্নিদগ্ধ হয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় নিজ বাড়িতে এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ঘটে। রান্নাঘরে আগুন পোহাতে পোহাতে নিজের শরীরে মোড়ানো কম্বরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক আহত হয়। পরে স্থানীয়, বিটিকেএস-সিন্দুকছড়ি উপ-আঞ্চলিক শাখার নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যগণের সহযোগীতায় বিকাল পৌনে তিনটায় আশংকাজনক অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় অটুল ত্রিপুরা নামে একজন যুবক তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন- হে মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা, আপনার এমন প্রয়াণে আজ পুরো দেশ ও জাতি লজ্জিত। সেকেন্ড যে সময় নেই হাতে একটু পানি পান করার। শুনেছি এমনও দিন গেছে যে পুরো ৫ টা দিন না খেয়ে যেতে হয়েছিল যুদ্ধে (আমাদের বাড়িতে ও থেকেছিল প্রায় অনেকটা মাস তখন বলে শুনিয়েছিল) । এই মানুষটা দেশের জন্য কতকিছুই না করলো আর আজ সেই মানুষটা না ফেরার দেশে চলে গেলেন নিঃস্ব হয়ে রিক্তশূন্যহস্তে। জাতি (ত্রিপুরা) হিসেবে অমানবিক,নিষ্ঠুর ও অকৃতজ্ঞ আমরা। তাঁকে থাকার জন্য একটা বাড়ি করে দিতে পারেনি, দুবেলা আহারের জোগান দিতে পারেনি, শান্তিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের একটি ছাদযুক্ত চার-দেয়ালের গৃহ দিতে পারেনি। সেই মানুষ আজ চলে গেলেন চিরতরে বুকে একরাশ অভিমান ও অভিযোগ নিয়ে। কতজনই না ছিল নেতা/নেত্রী নামে খ্যাত আমাদের নিষ্ঠুর এই সমাজে। সবাই নিজস্বার্থে বিভোর। শুনেছি সরকার মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য গৃহ নির্মাণ করে দেয়, বেতন-বাতার ব্যবস্থা করে দেয় এবং এছাড়াও নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন। কিন্তু এই মানুষটা কি পেয়েছে..? কিছুই যে তাঁর পাওয়া হলো না। শুনেছি সে শুধু মাসিক কিছু মুক্তিযুদ্ধার সম্মানি(বেতন) পেতেন। এখানেই তাঁর সীমাবদ্ধতা।
প্রশ্নটা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম উত্তর আপনারাই দিবেন,,,এটাই ছিল কি তাঁর প্রাপ্যতা?