

স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি।।
খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল (বিএমএসসি), জেলা কমিটি। জেলার মহালছড়ি উপজেলার চৌংড়াছড়িতে দুই বাঙালি কর্তৃক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার প্রতিবাদে সংগঠনটি বিক্ষোভ মিছিল করছে। রোববার সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে মিছিল করা হয়। মিছিলটি শহরের শাপলা চত্বর মোড় ঘুরে মুক্তমঞ্চে গিয়ে সমাবেশ করে।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএমএসসির চবি শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাথোয়াই অং মারমা। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নয়ন ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক অঞ্জু লাল ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি মেডিকেল শিক্ষার্থী ক্যচিংনু মারমা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নুচিং মারমা, ছাত্র নেতা কৃপায়ন ত্রিপুরা সহ বিএমএসসির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যতগুলো ধর্ষণ হয়েছে তার একটিরও বিচার সঠিকভাবে হয়নি। প্রতিনিয়ত পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী নারীদের উপর সহিংসতা বেড়ে চলেছে। বক্তারা অবিলম্বে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান, অন্যথায় বিএমএসসি ও সচেতন ছাত্র সমাজ এর প্রতিবাদে আরো কঠো কর্মসূচি দেবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এদিকে মহালছড়ি থানার সূত্রে জানায়, আজ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এজাহারভুক্ত দুই ব্যাক্তিকে মহালছড়ির চৌংড়াছড়ি এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন কাটিংটিলা এলাকার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ শাহাদাত হোসেন (২৫) ও চৌংড়াছড়ি গুচ্ছগ্রাম এলাকার মৃত মেছের আলীর ছেলে মোঃ শাহজালাল প্রঃ টুলু মিয়া (২২)।

এ ঘটনায় মহালছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আটককৃত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে মহালছড়ি থানায় ধারা-৯(৪) (খ) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩; আইনে মামলা দায়ের হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তদের আটক করতে সক্ষম হন এবং গ্রেফতার কৃত ব্যাক্তিদের যথাযথ পুলিশ স্কর্ট এর মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ঘটনা শোনার পর আমি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ও মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিই। অভিযোগকারীর তথ্যমতে তারা আসামী দুইজনকে আটক করে। পরে তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। কেউ অপরাধ করলে তাদেরকে অব্যশই আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য যে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে চৌংড়াছড়ি যৌথখামার এলাকায় ভিকটিম গৃহস্থালি কাজের জন্য কুয়া (পাহাড়ি ঝর্না) থেকে পানি সংগ্রহ করতে গেলে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা দুই ব্যাক্তি ভিকটিম এর উপর ঝাপিয়ে পরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ভিক্তিম বাঁচাও বলে চিৎকার করলে ভিকটিম এর স্বামী এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে গতকাল মহালছড়ি থানায় ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।