ঝুপড়ি ঘরে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান

মোঃ শহিদুল ইসলাম শহীদ, থানচি::
সরজমিন ঘুরে বান্দরবানের থানচি থেকেঃউপেজলা সদরের নারিকেল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং টুকটং পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ধীরগতির কারণে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

দুটি বিদ্যালয়ে প্রায় দুই বছর ধরে ভবন নির্মাণের কাজ চলমান তার একটা নারিকেল পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার কারণে পাড়ার একটি বৌদ্ধ বিহারের নিচ তলায় খোলামেলা জায়গায় চলছে পাঠদান শিক্ষা কার্যক্রম।

এতে গ্রীষ্মে রোদ, বর্ষায় বৃষ্টি আর কুয়াশার শীতে মাড়িয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা,স্থানীয়রা জানান, নতুন ভবনে নির্মাণধীন থাকায় নারিকেল পাড়া বৌদ্ধ বিহারের নিচতলার খোলা ফ্লোর এখন ‘অস্থায়ী স্কুল’। সব ঋতুতেই মেঝেতে বসেই ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে দুর্ভোগ হচ্ছে অন্যদিকে লেখা পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকবৃন্দ।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। পরে ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন ২০২২ সালে জুনের। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্কুলের ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে কথা থাকলেও আড়াই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নারিকেল পাড়া সরকারি স্কুলের নতুন ভবনে কাজ চলমান থাকায় বৌদ্ধ বিহারে নিচতলায় খোলা ফ্লোরে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সেখানে নেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও নিরাপদ পরিবেশ। অন্যদিকে নারিকেল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হলেও এখনও বাকি রয়েছে বিভিন্ন কাজ।

এ সময় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা জানান, ২০২২ সালের জুনে শুরু হয় এই দোতলা ভবন নির্মাণের কাজ। এরপর দ্রুত স্কুলটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কাজ চলছে ‘ঢিমেতালে’। কাজ শুরুর পর দফায় দফায় বন্ধ রাখা হয় কাজ। এমনকি শেষ পর্যায়ে এসেও গত কয়েকমাস ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজ।

অন্যদিকে টুকটং পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও তা শেষ না হওয়াতে পূর্বের বাঁশের তৈরি ভেঙে পড়া ঝুপড়ি ঘরে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান, জায়গা সংকট ক্লাস রুম নষ্ট হওয়ার কারণে শিক্ষকদের বসার জায়গা না থাকলে ও থেমে নেই শিক্ষা কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অং সি নু মারমা বলেন বিদ্যালয়ের অবস্থা তো দেখলেন যে কোন সময় ঝড় বাতাসে ভেঙে যেতে পারে, কবে বিদ্যালয়ের ভবন শেষ হবে জানা নেই, কাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরে আসবে, সহকারী শিক্ষক সিং থোয়াই অং মারমা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট আবেদন থাকবে আপনার তত্ত্বাবধানের‌ মাধ্যমে ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে দেন।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সোনা মিত্র চাকমা বলেন স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা পরিবেশ পাচ্ছে না। কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে বিষয়গুলো অবহিত করেছে,নির্মাণে কাজ দেরি হওয়ার কারণ এবং কাজ দ্রুত শেষ করতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আবু হানিফ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি জুনের শেষে দিকে দায়িত্ব পেয়েছি,স্কুল ভবনের কাজ বন্ধ ছিল আরও আগে কাজ শেষ হওয়ার কথা, কিন্তু হয়নি। তবে নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যেই ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি যোগদানের পর দুই বার চিঠি ইস্যু করেছি।

নারিকেল পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ এই মাসের মধ্যে এবং টুকটং পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আসা করছি।