
বশির আহাম্মদ, বান্দরবান: বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা ও লুটপাটের পর ওই এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্ক উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে রুমা উপজেলা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখনো খোঁজ মেলেনি সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের। তাকে উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে অভিযান জোরদার করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর ৫০ থেকে ৬০জনের একটি সশস্ত্র দল উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করে সেখানে পাশে থাকা সোনালী ব্যাংকে লুটপাট চালায়। সোনালী ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর ১৪ টি অস্ত্র ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি তারা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। মারধর করা হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
এ সময় সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংকের ভোল্টটি ভাঙচুর করে। ব্যাংকের ঐ ভল্টটিতে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা ছিল। ওই টাকা সন্ত্রাসীরা লুট করে নিয়েছে কিনা এ বিষয়ে সিআইডির একটি তদন্ত টিম তা পরীক্ষা করে দেখছে।বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে গত দুদিনে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সদর উপজেলা বাদ দিয়ে জেলার ছয়টি উপজেলার সব ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওসমান গণি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে রুমা সোনালী ব্যাংক এবং আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সব ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রুমা উপজেলায় এ ঘটনার পর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন, চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোঃ সৈকত শাহীন সহ প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। উপজেলা কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সেই সাথে বান্দরবানের প্রতিটি ব্যাংক এবং এটিএম বুথেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এদিকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের মুক্তি চেয়ে রুমা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেছে। অন্যদিকে রুমা উপজেলার সাথে বান্দরবান সদরের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর তৎপরতা কমিয়ে আনতে গত ৫ই মার্চ শান্তি কমিটির সাথে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।