ঈদগাঁও প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় এক অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেছে অনলাইন বাস টার্মিনাল (OBT)। সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতামূলক পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা জোরদারে জেলা পুলিশ, কক্সবাজারের প্রায়োগিক অভিজ্ঞতারর ফসল এই ডিজিটাল উদ্যোগের কার্যক্রম বিশ্ব পর্যটন দিবসে ( ২৭সেপ্টেম্বর) এক বছর পূর্ণ করেছে।
গত এক বছরে ওবিটি বাংলাদেশের আন্তঃ জেলা বাস পরিবহন ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাত্রীসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ওয়েবভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্মে দেশের সকল আন্তঃ জেলা বাস পরিবহন কোম্পানি ও ব্যবস্থাপনার তথ্য, বাস শিডিউল, ফিটনেস ও রুট পারমিটের তথ্য, চালক ও গাইডের ডেটাবেস, সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য, যাত্রীদের রেটিং-রিভিউ সিস্টেমসহ নানা সেবা সংযুক্ত হয়েছে।
গত এক বছরে এর সফলতার মধ্যে রয়েছে-
*ধ কক্সবাজারে চলাচলরত ৭৩টি আন্তঃ জেলা বাস পরিবহনের শিডিউল ডিজিটালভাবে একীভূত করা হয়েছে।
★ কক্সবাজার রুটে চলাচলরত ১০৫টি আন্তঃ জেলা পরিবহনের ১৭৬৮ টি বাস, ১৬৮০ জন চালক ও ২৩৮৬ জন গাইডের তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।
★ একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সকল পরিবহনের টিকিট প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
★ কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিতে ওবিটি'র অনলাইন বাস পারমিশনে প্রায় ১১ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দেশের সকল ট্রাভেল গ্রুপ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কর্পোরেট গ্রুপকে ওবিটি এই ডিজিটাল সুবিধা প্রদান করেছে।
★ অনলাইন শিডিউল সিস্টেম ও জেলা ভিত্তিক ড্যাশবোর্ডের কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পূর্ব-পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হয়েছে, ফলে যানজট কমেছে।
★ চালক ও গাইডদের তথ্য, বাস ছাড়ার গুগল ম্যাপ লোকেশন সংযুক্ত হওয়ায় যাত্রীসেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে।
★ যাত্রীদের অভিযোগ, রেটিং ও রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ চালক সহজে চিহ্নিত করা যাচ্ছে।
★ "ইমার্জেন্সি এলার্ম সিস্টেম" চালুর মাধ্যমে যাত্রীরা এখন সরাসরি নিরাপত্তা সংক্রান্ত জরুরি সহায়তা চাইতে পারছেন।
★ পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এলইডি ডিসপ্লেতে বাস শিডিউল প্রদর্শনের ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
*ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:*
ওবিটি শুধু কক্সবাজারেই নয়, দেশের সকল জেলায় প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি আন্তঃ জেলা টার্মিনালকে এই প্ল্যাটফর্মের আওতায় এনে একটি একক ও সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি যাত্রী নিরাপত্তা জোরদারে "ইমার্জেন্সি এলার্ম" ব্যবস্থাকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তৃত করা হবে। সড়কে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক মোবাইল এপসের মাধ্যমে বাসের সামনে দৃশ্যমান স্থানে সংযুক্ত কিআর স্ক্যানের মাধ্যমে বাসের ফিটনেস ও রুট পারমিটের যাচাই, এমন কি রিয়েল-টাইম চালকের তথ্য যাচাইয়ের ব্যবস্থার প্রবর্তন করা যাতে সময় বাঁচে ও জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব হয়।
বার্তা: কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, জেলা পুলিশ উদ্ভাবিত অনলাইন বাস টার্মিনাল মডেল বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের এক কার্যকরী মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। এই উদ্যোগ সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়কে মৃত্যুর হার অর্ধেকে নামিয়ে আনার Sustainable Development Goal (SDG) অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
দেখছি যা বলছি তা
https://dainikalokitopahar.com/