রামু প্রতিনিধি।।
খুচরা সার বিক্রেতাদের লাইসেন্স স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রামুতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কেএসবিএবি)। রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় রামু উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা শতাধিক খুচরা সার বিক্রেতা অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইরফানুল হক চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত নতুন সার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা–২০২৫ ক্ষুদ্র সার ব্যবসায়ীদের জীবন–জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশে আর আলাদা খুচরা সার বিক্রেতা বা সাব-ডিলার থাকবে না; বিদ্যমান লাইসেন্সধারী বিক্রেতাদের সনদ (আইডি কার্ড) স্থগিত করা হয়েছে এবং ৩১ মার্চ ২০২৬ এর মধ্যে সব দেনা-দায় পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন— তৃণমূল পর্যায়ে সার সরবরাহ ব্যবস্থায় খুচরা বিক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। এই ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে সার পাওয়া কঠিন হবে এবং কৃষকরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তারা আরও বলেন, “৩০ বছরের বেশি সময় আমরা সরকারি নীতিমালা মেনে কৃষকদের দোরগোড়ায় ন্যায্যমূল্যে সার সরবরাহ করছি। কৃষকের কাছে টাকা না থাকলেও ধার-বাকিতে সার দিয়েছি। অথচ আমাদের মতামত না নিয়েই এমন নীতিমালা করা হয়েছে, যা আমাদের জীবিকাকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।”
বক্তারা দাবি করেন, সার সরবরাহে খুচরা বিক্রেতাদের বাদ দিলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে এবং সিন্ডিকেট সক্রিয় হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। ৪৪ হাজার খুচরা সার বিক্রেতার ওপর প্রায় ৫ কোটি কৃষক নির্ভরশীল—এই বাস্তবতা বিবেচনায় নীতিমালা সংশোধনের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন— খুচরা সার ডিলার এসোসিয়েশন রামু উপজেলা সভাপতি মাওলানা নুর হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, সহসভাপতি মাওলানা আবুল মঞ্জুর ও আবদুল গনি হেলালী, সহ সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাঈল, কোষাধ্যক্ষ আজিজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক আব্দুল খালেক, অফিস সম্পাদক দীপক বড়ুয়া, কার্যকরী সদস্য মো. মীর কাশেম, ওমর ফারুক, বদর মিয়া প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে মাওলানা নুর হোসাইন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে দাবি তোলা হয়- খুচরা সার বিক্রেতাদের আইডি কার্ড ও লাইসেন্স বহাল রাখা, নতুন নীতিমালা পুনর্বিবেচনা বা সংশোধন করা, খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশনকে টি.ও লাইসেন্স প্রদান করা, নীতিমালা বাস্তবায়নে লক্ষ লক্ষ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—এ বিবেচনায় সরকারের পুনর্বিবেচনা।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে ইউএনও মো. ইরফানুল হক চৌধুরী বলেন,“আপনাদের দাবি ও সমস্যা যথাযথভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। কৃষকের স্বার্থে যেটি উত্তম হবে, প্রশাসন সেটিকেই বিবেচনায় নেবে।”
দেখছি যা বলছি তা
https://dainikalokitopahar.com/