কোনো শিশু যেন ঝরে না পড়ে- খাগড়াছড়িতে টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের জোর প্রস্তুতি

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
সারাদেশের মতো পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি।

রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবেরের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা, জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম সুমন, পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক ফারুক আব্দুল্লাহ, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম,খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত( জামাল উদ্দিন এবং খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জহুরুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন— “মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার সুস্বাস্থ্য। শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা জাতির ভবিষ্যতের ভিত্তি। সরকার আজ প্রতিটি শিশুর স্বাস্থ্যসুরক্ষায় যে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরাও পাচ্ছে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার অধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই—খাগড়াছড়ির কোনো শিশু যেন টিকার বাইরে না থাকে। এজন্য অভিভাবকরা যেন সচেতনভাবে তাদের সন্তানদের টিকা নিতে নিয়ে আসেন।”

অনুষ্ঠানে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের বলেন— “টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে সরকার ইপিআই কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। খাগড়াছড়িতেও নয় মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।”

তিনি জানান, এ কর্মসূচির আওতায় খাগড়াছড়ি জেলায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬৭ জন শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হবে। “আমাদের লক্ষ্য পাহাড়ের সব শিশুকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা—কোনো শিশুই যেন ঝরে না পড়ে,” যোগ করেন সিভিল সার্জন।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় উদ্যোগ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি দেশের শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকার শিশু-কিশোররা টাইফয়েডের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকবে এবং একটি সুস্থ, শক্তিশালী প্রজন্ম গড়ে উঠবে।