চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকুরীতে পুনর্বহালের দাবিতে খাগড়াছড়িতে স্বারকলিপি প্রদান

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও চাকুরীচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যদের চাকুরীতে পুর্নবহালের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এর বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বারকলিপি প্রদান করেছে খাগড়াছড়ি জেলা’র চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ।

মঙ্গলবার (১০সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ খাগড়াছড়ি জেলা’র চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দরা জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান’র মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্বারকলিপি প্রদানের পরপরেই চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের প্রতিনিধি মো. আবুল হোসেন বলেন,২০০৯ ইং সালে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় চাকুরীচ্যুত বিডিআর সদস্যগণ তৎকালীন সরকারকে স্বন্তুষ্ট করতে, সেনাবাহিনীর সামর্থ ক্ষুন্ন করতে বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করার জন্য, প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে এবং ক্ষমতাকে সুদৃড় করতে নীল নকশার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানা হত্যাকান্ড সংগঠিত করে ৷ এই হত্যাকান্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন সাহাদাৎ বরন করেন। ঘটনা পরবর্তী ফ্যাসিষ্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত করে ১৮৫২০ জন বিডিআরকে চাকুরীচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে । আমরা আজ হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমাদেরকে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় তারা ৯টি দাবি পেশ করেন,দাবিসমূহ:
১। ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী বিডিআর পিলখানা সংঘঠিত সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে তথা কথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে।
২। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালত কে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে।
৩। চাকুরীচ্যুত সকল পদবীর বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধা সহ চাকুরীতে পূর্ণবহাল করতে হবে।
৪। হত্যাকান্ড মামলার মহামান্য হাইকোর্টের বিচারকগণের রায়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী পিলখানার হত্যাকান্ডের ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও কুশিলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৫। পিলখানা হত্যাকান্ডে শাহাদাৎ বরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন কে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।
৬। ২৫ ফেব্রুয়ারী দিনটিকে পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস হিসাবে ঘোষনা করতে হবে।
৭। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পরবর্তী তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ পূর্বক মৃত সকল পদবীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পূর্নবার্সন করতে হবে।
৮। তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিযুক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত পূর্বক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৯। বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষকারী বিডিআর সদস্যগণ যারা প্রহসনের বিষ্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারাঅন্তরীন আছে, তাদের কে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা হতে অব্যাহতি পূর্বক মুক্ত করতে হবে।

অতএব, হুজুর সমীপে আকুল আবেদন উপরেল্লিখিত বিষয়টি সদয় সুবিবেচনাপূর্বক হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও চাকুরীচ্যুতদের চাকুরীতে পুনর্বহাল করিতে একান্ত মর্জি হয়।

এ সময় চাকরিচ্যুত বিডিআর কল্যাণ সমিতি খাগড়াছড়ি শাখা’র মিন্টু চাকমা,জ্যোতি বিকাশ চাকমা,ক্যাজু মারমা,কদম মোহন চাকমা,ইয়াছিন ফরাজী,কালো প্রদীপ তালুকদারসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।