

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
শুধু বইয়ের পাতায় নয়, প্রান্তিক জাতিসত্তার ভাষা, সংস্কৃতি আর জীবনের গল্প শুনতে-দেখতে-অনুভব করতে সরাসরি পাহাড়ে ছুটে গেলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের খুমপুই রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির “সংস্কৃতিক অধ্যয়ন ও প্রান্তিক জাতিসত্তা” কোর্সের মাঠভিত্তিক পাঠ। এ যেন পাঠ্যবইয়ের বাইরের এক জীবন্ত পাঠশালা—যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আবিষ্কার করেছেন ভিন্ন এক বাস্তবতায়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জি.এম. মনিরুজ্জামান, মাইসছড়ি কলেজের অধ্যক্ষ অভিধা চাকমা, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আর্য্যমিত্র চাকমা এবং লেখক চিংলামং চৌধুরী। বাংলা বিভাগের আরও শিক্ষক এবং ৪৫ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী এই আয়োজনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
আলোচনায় উঠে আসে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ভাষাগত বৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব, সামাজিক সংকট এবং স্বকীয়তা টিকিয়ে রাখার সংগ্রামের গল্প। শিক্ষার্থীরা সরাসরি জানতে পারেন আধিবাসী সমাজের আত্মপরিচয় রক্ষার সংগ্রাম ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের ইতিহাস।
অধ্যাপক জি.এম. মনিরুজ্জামান বলেন, “শিক্ষা তখনই পূর্ণ হয়, যখন তা জীবনের সঙ্গে মিশে যায়। মাঠেই রয়েছে শেখার আসল জগত। এমন উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের অন্তর্দৃষ্টি বিকাশে বিশাল ভূমিকা রাখবে।”
শিক্ষার্থীরা জানান, এই অভিজ্ঞতা তাদের শুধু একাডেমিক নয়, মানবিকভাবেও সমৃদ্ধ করেছে। তারা যেন বইয়ে পড়া ‘বাংলা সাহিত্য’কে খুঁজে পেয়েছেন পাহাড়ি জনজীবনের গভীর বাস্তবতায়।
এই আয়োজন শুধু একটি কোর্সের শিক্ষা নয়—এটি হয়ে উঠেছে বহুসাংস্কৃতিক সমাজে সহাবস্থান, শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতার এক বাস্তব অনুশীলন।