উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা মিলেছে দীর্ঘ ছুটিতেও

মো. ইসমাইলুল করিম, প্রতিনিধি:
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামায় উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেবা কেন্দ্র ও চিউনি পাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক জরুরী স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত ছিলেন। ঈদের দিনেও হয়েছে নরমাল ডেলিভারী। গর্ভবতী মায়েদের সকল প্রকার স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। ছুটিকালীন সময়ে চিকিৎক সংকটসহ নানা কারণে যখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলোতে সেবা কার্যক্রম শিথিল ছিলেন। এমনকি বেসরকারী ক্লিনিক গুলোও যথাযথ কার্যক্রম চালু ছিল না, তখনও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্যে গর্ভকালীন সেবা, প্রসব সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা, শিশু সেবা, কৈশোর কালীন কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবাসহ জরুরী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে সেবা গ্রহীতাদের ভরসার স্থল হয়ে ওঠে লামা উপজেলার দুইটি সেবা কেন্দ্র। সংকটকালে এমন জরুরী সেবা পেয়ে সেবা গ্রহীতারা সন্তোষ প্রকাশ করছেন।

লামা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা অর্পা খিয়াং বলেন, গত ০৪ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারী ছুটিকালীন সময়ে ফাঁসিয়াখালী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে জরুরী সেবা প্রদান অব্যাহত রাখি। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যে দুইজন মায়ের নরমাল ডেলিভারি করি। লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পাহাড়ী গ্রামের ফাতেমা বেগমের (২০) নরমাল ডেলিভারি হয় গত ০৭ জুন ঈদের দিন সকাল সাড়ে দশটার দিকে। তাঁর স্বজন ইকবাল জানান, আমাদের বাড়ি খুব দুর্গম পাহাড়ী এলাকায়। চাঁদ রাতে ফাতেমা বেগম যখন প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন স্থানীয় সরকারী ফাঁসিয়াখালী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে তাকে নিয়ে যায়। এখানের অর্পা খিয়াং আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেন। ঈদের দিনও তিনি অতিযত্ন সহকারে নরমাল ডেলিভারী করিয়ে দেয়। মা ও শিশু উভয়ে সুস্থ আছে। এদিকে কথা হয় ফাতেমা বেগমের সাথে। তিনি, বিনামূল্যে আন্তরিক সেবা পেয়ে সংশ্লিষ্ট সেবাদাতাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।অনুরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, এ সময়ে সেবা পাওয়া মুসলিমা ফাতেমা বেগমও। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র এর পরিদর্শিকা অর্পা খিয়াং বলেন, ঈদের ছুটির সময়ে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা নরমাল ডেলিভেরি, গর্ভবতী মায়েদের প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী, স্বল্প মেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও শিশুসেবা সহ সাধারণ রোগীদের বিনামূল্যে আন্তরিকতার সাথে আমরা সেবা প্রদানে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আমি ঈদের দিনে দুইজন প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারী করেছি। এ ছাড়া গত ১ বছরে এ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ৪৮জন প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারী করেছি। লামা উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ বাপ্পী মার্মা বলেন, উপজেলার ৯টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান ইউনিয়ন সেবা সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে দরদরী ও ইয়াংছা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে এ সেবা নেই। সার্ব্বিক দিক-নির্দেশনায় আমাদের সকল কেন্দ্র গুলিতে সার্ব্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রাখা হয়। এজন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হয়।ভবিষ্যতে জনকল্যাণে এই সেবামুলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আমাদের সেবা কার্যক্রমের মাঝে রয়েছে জনবল সংকট। শতভাগ জনবল থাকলে সেবার মান আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবেন।