আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি
রাবার শিল্পের স্বর্ণযুগ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি একসময় রাবার উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিল। এখানকার পাহাড়ি জমিতে গড়ে ওঠা শত শত রাবার বাগান স্থানীয় অর্থনীতিকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি হাজার হাজার পরিবারের জীবিকার প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই শিল্প পড়েছে ভয়াবহ সংকটে। সংঘবদ্ধ চোরচক্র রাতের আঁধারে বাগানে ঢুকে নির্বিচারে কেটে নিচ্ছে রাবার গাছ, নিয়ে যাচ্ছে কাঁচা রাবার, এমনকি ট্যাপিং কাপসহ অন্যান্য সরঞ্জামও লুট করে নিচ্ছে। এতে প্রতিদিনই লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষীরা।
বাইশারী রাবার বাগান মালিক সমিতির সেক্রেটারি জসীমউদ্দীন বলেন আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত রাবার চাষীর করুণ অভিব্যক্তি— “আমরা রাতদিন কষ্ট করি, কিন্তু চোরের ভয়ে শান্তিতে কাজ করতে পারি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো উদ্যোগ নেই। গতকাল কে আমার বাগলের বক্স ফুটো করে দিয়েছে চোরের দলেরা এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বাগান বিক্রি করতে হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের টহল ও নজরদারির অভাবে চোরচক্র দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। একসময় লাভজনক এই শিল্পে এখন আর নতুন বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যেই কিছু বাগান মালিক নিরুপায় হয়ে বিক্রির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন।
বাইশারী রাবার মালিক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ রফিক বসরী বলেন— “যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে রাবার শিল্পই উঠে যাবে। এর সঙ্গে ধ্বংস হবে এলাকার অর্থনীতি
বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রতিদিন কয়েক টন কাঁচা রাবার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নিয়মিত চুরি ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে উৎপাদন এখন দিন দিন ভয়াবহভাবে কমছে। এতে চাষীদের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের দাবি, রাবার শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাহাড়ি জনপদের অর্থনীতি রক্ষা করতে হলে চোরচক্র দমন এবং বাগান মালিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই একমাত্র সমাধান। একসময় নাইক্ষ্যংছড়ির অর্থনীতির প্রাণ ছিল রাবার শিল্প। অথচ আজ তা বিলীন হওয়ার পথে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে একটি সম্ভাবনাময় শিল্প ধ্বংস হবে, আর হাজারো পরিবার জীবিকা হারিয়ে পড়বে চরম অনিশ্চয়তায়।
এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাসরুরুল হক জানান বিষয়টি আমরা দূরত্ব সহকারে দেখছি
দেখছি যা বলছি তা
https://dainikalokitopahar.com/