

মো. ইসমাইলুল করিম, প্রতিনিধি :
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামায় আটক তিন অপহরণকারী সন্ত্রাসী রহিম ত্রিপুরা, টানিয়েল ত্রিপুরা ও হালিরাম ত্রিপুরা। অপহৃত যুবক আব্দুল খালেক (২০) নামে এক রিসোর্ট ম্যানাজারকে গভীররাতে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে সন্ত্রাসীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ২টায় লামার উপজেলার মিরিঞ্জা প্যারাডাইস ভ্যালী থেকে রিসোর্টের ম্যানাজার আব্দুল খালেককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ইয়াংছা বদুরঝিরি গ্রামের মো. শফির ছেলে।জিম্মি করে নেয়ার সময় অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে যায় ম্যানাজার আবদুল খালেক। পরে তার দেয়া তথ্য মতে স্থানীয়রা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরিঞ্জা বাগানপাড়া এলাকা থেকে তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে। আটক তিন সন্ত্রাসীকে গণধোলাই দিয়ে লামার ইয়াংছা আর্মি ক্যাম্পে সেনাবহিনীর হাতে তুলে দেন।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) এনামুল হক (পরিদর্শক তদন্ত) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রিসোর্টের ম্যানাজার অপহরণের বিষয়টি আগে আমাদের কেই জানাইনি। বিকেল ৩টায় তিন সন্ত্রাসীকে আটক করলে বিষয়টি জানতে পারি। জনতা সন্ত্রাসী তিনজনকে আটক করে ইয়াংছা আর্মি ক্যাম্পের সোপর্দ করে। তাদের কাছে প্যারাডাইস ভ্যালী থেকে ছিনতাই করা দুইটি মোবাইল এবং একটি কিরিচ জব্দ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপহরণকারীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।আটক তিন সন্ত্রাসীরা হলেন, উপজেলা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মিরিঞ্জা বাগান পাড়ার পুনিন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে টানিয়েল ত্রিপুরা (৩৮), বান্দরবান রুমা উপজেলার বগালেক এলাকা পুকুরপাড়ার নথিঅং ত্রিপুরার ছেলে রহিম ত্রিপুরা (৩০) এবং থানচি উপজেলার বড়মদক এলাকার মেকিয়া ত্রিপুরার ছেলে হালিরাম ত্রিপুরা (২৮)।
অপহৃত আব্দুল খালেক জানান, রাতের পরিবার নিয়ে রিসোর্টে ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ২টায় ৮/১০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে আটক করে। পরে আমাকে চোখ বেধেঁ নিয়ে যায় এবং আমার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। তারা আমাকে জিম্মি করে রিসোর্ট মালিকের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী। রাতে গভীর জঙ্গল দিয়ে আমাকে নিয়ে যাওয়ার সময়, সুযোগ বুঝে আমি পাহাড়ের নিচে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে বাগান পাড়া এলাকায় তল্লাশী করে তিনজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। জনতাকে দেখে সন্ত্রাসীরা তাদের হাতে অস্ত্র পাহাড়ের গভীর খাদে ফেলে দেয়ায় অস্ত্র পাওয়া যায়নি। আটককৃতদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দেয়া হয়েছে। এই সন্ত্রাসী আরও অসংখ্য হত্যা, গুম ও মারামারি মামলার আসামি। লামা মিরিঞ্জা প্যারাডাইস ভ্যালীর মালিক মো. আইয়ুব আলী বলেন, রাত ২টা ৩০ মিনিটে আমার ফোনে কল দিয়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। ভাগ্য ভালো আব্দুল খালেক পালিয়ে আসছে। আটক সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। বাগান পাড়া ও আশপাশের পাড়া গুলোতে তল্লাশী চালালে আরও অনেক অস্ত্র পাওয়া যাবে। তারা এইসব অস্ত্র দিয়ে সবাইকে জিম্মি করেন।