
বশির আহমেদ, বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
বান্দরবানে হাঁস চুরির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে বর্বর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি মেম্বার শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সকালে বান্দরবান সদর উপজেলার গোয়ালিয়াখোলা রোয়াজুপাড়া এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার রেইছা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গোয়ালিয়াখোলা এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ৩টি হাঁস চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির অভিযোগে স্থানীয় ইউপি মেম্বার শহীদুল ইসলাম ফোন করে বিচারের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে আনেন রোয়াজুপাড়া সিনুমং মারমার দোকানে।
এ সময় চুরির অভিযোগটি স্বীকার না করায় স্থানীয় যুবক তাজউদ্দিন (২০) এবং স্থানীয় বাসিন্দা উহ্লা মংকে (৪৩) শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। প্লাস দিয়ে টেনে হাতের নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করেন এবং প্লাস ও লাঠি দিয়ে মারধরের দৃশ্য ভিডিওতে দেখা গেছে। পরে পুলিশকে ডেকে দুজনকে চুরির মামলায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আদালতের নির্দেশে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার যুবকের পিতা মোহাম্মদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তিনটি হাঁস চুরির অভিযোগে ছেলেকে অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করেছেন ২নং ইউপি মেম্বার শহীদুল ইসলাম। ঘটনাস্থল ১নং ওয়ার্ডে হলেও অন্য ওয়ার্ড থেকে এসে ইউপি মেম্বার এমন বর্বর নির্যাতন করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। আমি এই নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, চুরির অভিযোগে তারে ভয়ভীতি দেখিয়ে কথা বের করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাজউদ্দিনের কোনো নখ তোলা হয়নি। আমি শুধু ভয় দেখানোর জন্য প্লাস হাতে নিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছি— এটা আমার ভুল হয়েছে। নখ তোলার অভিনয় করাটা অনুচিত ছিল বলে তিনি স্বীকার করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ জানান, গোয়ালিয়াখোলা রোয়াজুপাড়ার বাসিন্দা সুজন ইসলামের দায়ের করা চুরির মামলায় মালামালসহ ওই যুবককে স্থানীয়রা ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনাস্থল থেকে দুটি গ্যাস সিলিন্ডার এবং নেবুলাইজার মেশিন উদ্ধার করেছে। তবে চুরির ১২ হাজার টাকা উদ্ধার হয়নি। ওই যুবকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্যসহ আরও কয়েকটি মামলাও রয়েছে থানায়।