
কাপ্তাই প্রতিনিধি:
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কর্ণফুলী নালন্দা বৌদ্ধ বিহারে ৩৮ কঠিন চীবর দান উদযাপন করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দিনব্যাপী উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কর্ণফুলী নালন্দা বৌদ্ধ বিহারে এ উৎসব শুরু হয়। হাটহাজারী ভিক্ষু সমিতি সাধারণ সম্পাদক ও বিহার অধ্যক্ষ ড.ভদন্ত বুদ্ধ পাল মহাথেরোর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এর সম্মানিত ট্রাস্টি মেজর (অব:) ডা. অজয় প্রকাশ চাকমা। এতে প্রধান ধর্ম দেশক
হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গুনিয়া শঙ্খরাজ ভিক্ষু সমিতির কোষাধ্যক্ষ ভদন্ত উওমানন্দ স্থবির। বিশেষ ধর্মদেশক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চিতরম মইদং পাড়া বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত অক্ষয়ানন্দ স্থবির,জুমপাড়া সর্বজনীন ত্রিরত্ন বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ জ্যোতিলংকার ভিক্ষু। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সমর বড়ুয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি জয়সীম বড়ুয়া ও অর্থ সম্পাদক রাজু কান্তি বড়ুয়া। বিহারের সাধারণ সম্পাদক কাজল বড়ুয়া ও অদ্রি বড়ুয়া সঞ্চালনায় এসময় গেস্ট ওনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাংবাদিক নির্মল বড়ুয়া মিলন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি বৌদ্ধাষ্কুর বৌদ্ধবিহার আসামবস্তি এর উপদেষ্টা জুঁই চাকমা। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন বিহারের সাংগঠনিক সম্পাদক ওভেল বড়ুয়া। এ উৎসব উপলক্ষে ভোর থেকে নতুন পোশাকে সজ্জিত হয়ে এ বিহারে উপস্থিত হন কাপ্তাইয়ের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শত শত নর-নারী। এসময় শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে সকাল থেকে ফুলপূজা, বুদ্ধপূজা, দেশ-জাতি তথা সকল প্রাণীর হিত, সুখ ও মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার,কল্পতরু দান, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ডদানসহ নানাবিধ দান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উত্তোলন করা হয়। বৌদ্ধ বিহার কমিটির সভাপতি সমর বড়য়া জানান, আমরা যে কাপড়টি পরিধান করি, সেটিকে চীবর বলা হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে একটি বিহারে একদিন এ চীবর দান অনুষ্ঠানটি করা যায়। বিহারের সহসভাপতি জয়সীম বড়ুয়া জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুতা থেকে কাপড় বুনে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করতে হয়। এজন্যই এটিকে কঠিন চীবর দান বলা হয়। মানব জীবনের সব অন্তরায় দূর হোক—এই কামনা করে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি হয়।