প্রধান শিক্ষকের কেলেঙ্কারি- সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি

মো. গোলামুর রহমান, লংগদু: একজন মানুষ গড়ার কারিগর যখন একের এক মেয়ে কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত হচ্ছে। সেখানে এখনো তিনি কি ভাবে বহাল তবিয়তে আছে? এমন প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করছে সচেতন শিক্ষক মহল ও জন সাধারণ। বলছি রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ফরেরমুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীতি চাকমার কথা।

এসব অনৈতিক ও মেয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনায় শিক্ষক সমাজ লাঞ্ছিত হওয়ায় ২৪ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১টায় লংগদু উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির আয়োজনে, সমিতির সহ সভাপতি ও ঝর্ণাটিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে জরুরী আলোচনা সভায় হয়। উক্ত সভায় মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় শুরুতেই বক্তব্য রাখেন, অত্র সমিতির সাধারন সম্পাদক মীর শাহ আলম চৌধুরী। এসময় প্রধান শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে কেলেঙ্কারির প্রধান শিক্ষক সুনীতিকে লংগদু উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সময় অত্র সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আটারকছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যান মিত্র চাকমাকে সভাপতির পদ অর্পন করা হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, সুনীতি চাকমা তিনি গত ৬ ডিসেম্বর রাতে আটারকছড়া এলাকার এক চাকমা গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করলে স্থানীয় চাকমা জনগোষ্ঠীর হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং গনপিটুনিতে আহত হয়। পরবর্তীতে এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মুরব্বিদের কথামত সমাধান করা হয়। যা আমরা স্থানীয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি। এর আগেও তিনি রাঙ্গামাটিতে হোটেল জজ, এবং হোটেলে মেয়ে নিয়ে জনতার হাতে আটক হয়। তার এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে আমাদের শিক্ষক সমাজের মাথা নত হয়েছে বিধায় তাকে তার পদ এবং অত্র সমিতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে কথা হয় স্থানীয় ভবৌতোষ চাকমার সাথে, তিনি জানায় ঘটনার দিন আমাকে বলেছিলো আমি যাইনি। সুনীতির এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা সবাই জানে।ঘটনাটি সত্য, তবে শুনেছি পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে।

আটারকছড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জুতিন বিকাশ চাকমা বলেন, ঘটনা সত্য। সেদিন তিনি পাবলিকের হাতে ধরা পড়লে স্থানীয় মুরব্বিদের মাধ্যমে এটা সমাধান করে নেওয়া হয়।

কেলেঙ্কারি এবং অব্যাহতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সুনীতি চাকমা বলেন, সমিতি থেকে যে কেউ চাইলে আমাকে অব্যাহতি দিতে পারে না। অব্যাহতি দিতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে দিতে হবে। ৬ ডিসেম্বরের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ছিলো একটা ষড়যন্ত্র, আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এম কে ইমাম উদ্দীন বলেন, ৬ ডিসেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ এখনো আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই আমরা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। আর প্রধান শিক্ষক সমিতি বা সহকারী শিক্ষক সমিতির সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। এটা সম্পূর্ণ তাদের বিষয়।