বাংলাদেশে তঞ্চঙ্গ্যাবাসীর বর্ণমালা ও কাহিনি কাব্যর ২ টি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচিত

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার বড়ই ছড়িতে তঞ্চঙ্গ্যা ছাত্রাবাসে অবস্থিত বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তঞ্চঙ্গ্যাবাসীর ভাষা, বর্ণমালা ও সাহিত্য সংরক্ষণ, প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে দুটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। একটি তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা বিষয়ক পুস্তক যার নাম “আধুনিক তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা” এবং অপর গ্রন্থটি তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় রচিত প্রথম কাহিনীকাব্য যার নাম “পেয়ংখুলা’ব ছ”। গ্রন্থ দুটি রচনা করেন তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও ভাষাকর্মী শ্রী চন্দ্রসেন তঞ্চঙ্গ্যা এবং গ্রন্থ দুটি প্রকাশ করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার শ্রী অমল বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা।

গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দীপ্তিময় তালুকদার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন ১০০ নং ওয়াগগা মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই অঞ্চলের সভাপতি অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, দেবতাছড়ি-রৈস্যাবিলি অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক বাবু অপূর্ব কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওয়াগগা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নৃত্য প্রশিক্ষক মিসেস সুফলা তঞ্চঙ্গ্যা, সুজন তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।

বক্তাগণ বলেন, এমন একটি কল্যাণকর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রকাশক ও আয়োজক অমল বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যাকে সাধুবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। স্বাগত বক্তব্যে অমল বাবু জানান, লেখকের সাথে পূর্বে পরিচয় ছিল না। লেখকের প্রকাশিত “পাত্তুরু তুরু” কাব্যগ্রন্থ পাঠ করে তিনি তাঁর পরিচয় জানতে কৌতুহল বোধ করেন। অতপর ২০২৩ সালে লেখকের সম্পাদিত তঞ্চঙ্গ্যা গানের সংকলন “চিত্রাংফুল” প্রকাশ করেন। সেই ভালোবাসা থেকে এই বছর লেখকের এই দুটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। বাবু সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাহিত্য রচনা এত সহজ নয়। চাইলে যে কেউ সাহিত্য রচনা করতে পারে না। সাহিত্য রচনার জন্য প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য, পরিশ্রম ও মেধা। ডা: জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা ও বাবু অপূর্ব কুমার তঞ্চঙ্গ্যা নিজ এলাকার সাহিত্যিক হিসেবে চন্দ্রসেন তঞ্চঙ্গ্যাকে নিয়ে গর্ববোধ করেন।

ডা: জয়ধন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে লেখককে সম্মাননা প্রদানের আহ্বান জানান। সুমনা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, লেখকের আরও দুটি গ্রন্থ আর্থিক দৈন্যতায় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানালে প্রধান অতিথি বাবু দীপ্তিময় তালুকদার একটি পুস্তক নিজ খরচে ছাপানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তঞ্চঙ্গ্যা জাতির ভাষা, বর্ণমালা ও সাহিত্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে সামর্থ্যবান সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা সাহিত্য, সংস্কৃতি, সংগীত নিয়ে কাজ করেন তাঁদেরকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।