

মো. ইসমাইলুল করিম, প্রতিনিধি :
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামার ফাইতংয়ে চুরি হওয়া গরু’সহ জনতার হাতে আটক আব্দুল্লাহ (প্রকাশ) মাসুম চোর’কে প্রকাশ্যে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন স্থানীয়রা। পরে চুরির দায় স্বীকার করে এই চোর। ‘ভবিষতে এহেন ঘৃনিত অপকর্ম না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেলেন ওই ব্যক্তি (চোর)। তিনি ফাইতং ইউনিয়নের প্রক্ষাত আলেম মাওলানা হাসান আলীর ছেলে এবং এই চোর দাওরায়ে হাদিস বিষয়ে অধ্যয়নরত আছেন বলে জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১২টায় ভাঙ্গা ব্রিজ স্টেশনে আলোচনাও সমালোচনা নিয়ে লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে সুতাবাদী পাড়া ও খেদারবান গ্রামে সমাধান হয়। চোর মাসুমের বড় ভাইয়ের মামা শাশুড় নুর বক্স এর বাড়ি থেকে চুরি হওয়া গরু উদ্ধার করা হলেও চুরির ঘটনায় নুর ব্ক্স জড়িত থাকায় বিষয়টি প্রমানিত না হওয়ায় তাকে স্থানীয় জনতা ধন্যবাদ দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিদায় দেন। ঘটনার কয়েকটি ভিডিও-ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, একটি খুঁটির সঙ্গে গরু’সহ বাঁধা অবস্থায় আছে এই চোর। জুয়া খেলায় অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঋনের টাকা পরিশোধে এই চুরি করেছে বলে জানায় চোর।
স্থানীয়রা জানান, বানিয়ারছড়া মাদ্রসার প্রধান পরিচালক অত্র এলাকার মুরুব্বি ও মাওলানা হাসান আলী ছেলে মাসুম খেদারবান দেলোয়ার হোসেনের গরু চুরি ঘটনা ঘটায়। নুর বক্স দেওয়া তথ্য মতে গরু চুরি সন্দেহের ভিত্তিতে বিকালবেলায় ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তার পাশে আটক করে। এরপর ভাঙ্গা ব্রিজ স্টেশনে দোকানের সামনে গরু’সহ খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। গরু মালিক পরিবার সমাজিক মানুষ হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে স্থানীয় মান্যগন্য ব্যক্তিদের কথা মতো স্থানীয় সামাধান মেনে নেন। গরুসহ চোর উদ্ধারের পরে চোরের পিতা মাওলানা হাসান আলী ঘটনাস্থলে আসেন। পরে স্থানীয় জনতার উপস্থিতি’তে ইউপি সদস্য মো. জুবাইরুল ইসলাম, যুবনেতা মোহাম্মদ ইমাম উদ্দিন,হারুন রশীদ লিটন, মো.জাকির হোসেন, মাওলানা হাসান আলী, নুরুল ইসলাম’সহ কয়েকজন মুরব্বি গ্রাম্য সালিসে এমন কাজ আর কখনো করবে না মর্মে মুচলেকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফাইতং ইউপি সদস্য জুবাইর,ইমাম উদ্দিন বলেন, এলাকায় জুয়ার আড্ডায় দোকান চুরি ,মোটর চুরির বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। এবার গরু’সহ চোর হাতেনাতে ধরা পড়েছে। গরু চুরির কথা স্বীকারও করেছে, তার পিতা ও এলাকার লোকজনের মতামত নিয়ে তাকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মাসুম মাওলানা হুজুরের ছেলে বলে এ’বিষয়ে বর্তমান কোনো ব্যক্তি স্পষ্ট বক্তব্য দিতে চাননি।
ফাইতং এলাকার কয়েকজন মাওলানাদের’কে একাধিকবার ফোন করে তাদের মতামত জানতে চাওয়ার চেস্টা করা হলে তারা ফোন ধরেননি।
এ বিষয় ঘটনা সততা নিশ্চিত করে মাওলানা হাসান আলী বলেন, এই ছেলে আমার না। তাকে পুলিশ’কে দিয়ে দিন।আমি চোরের বাপ না। পরে পরিস্থিতি বুঝে মুচলেকা দিয়ে ছেলেকে নিয়ে যায় তিনি। গরু চুরি বিষয়ে ফেইসবুক পোস্ট ও কমেন্টে একজন লিখেন “পাপে বাপরে ন ছাড়ে” আমার কষ্টের চাকরীর টাকা দেয়নি এই হাসান আলী সাহেব। আমি তখন থেকে ঘোষনা দিয়ে আসতেছি এখনো বলছি তোমরা সবাই সাক্ষী থাকিও হাসান আলী মারা গেলেও আমার কষ্টের টাকা না দেওয়া পর্যন্ত খাটিয়া সরাতে দিব না। তিনি মাওলানা হাসান আলীর মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাহফুজুল করিম শাহেদ।
এ বিষয়ে লামা থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গরু চুরির ঘটনার বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।