খুচরা সার বিক্রেতাদের লাইসেন্স স্থগিতের সিদ্ধান্তে মাটিরাঙ্গায় ক্ষোভ: কৃষি সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

মো. আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা
বাংলাদেশের খুচরা সার বিক্রেতাদের লাইসেন্স স্থগিতের ঘোষণার প্রতিবাদে কৃষি সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার খুচরা সার বিক্রেতারা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি পাঠানো হয়।

স্মারকলিপিতে তারা জানান, সম্প্রতি কৃষি উপদেষ্টার এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে খুচরা সার বিক্রেতাদের সনদ স্থগিত করা হবে এবং তাদের আর কোনোভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে না। এই ঘোষণায় দেশের প্রায় ৪৪ হাজার খুচরা সার বিক্রেতা গভীরভাবে হতাশ ও উদ্বিগ্ন হয়েছেন।

বিক্রেতারা বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কৃষকদের দোরগোড়ায় সার পৌঁছে দিচ্ছি। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ও সরকারি নীতিমালানুযায়ী লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও ৩০–৪০ লক্ষ টাকার পুঁজির বিনিয়োগে কাজ করছি। কৃষক চাষাবাদের সময় অর্থ সংকটে পড়লে আমরা হাজার হাজার টাকা বাকিতে সার সরবরাহ করি।”

তাদের অভিযোগ, নীতিমালা প্রণয়নের আগে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মতামত নেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও সহনীয় হতো। “আমাদের জীবিকা এই পেশার উপর নির্ভরশীল, কর্মহীন হলে পরিবার নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় থাকবে না”—বলেন বিক্রেতারা।

স্মারকলিপিতে তারা আরও উল্লেখ করেন, সরকারি কোষাগারে ৩০ হাজার টাকা জামানত জমা দিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারের স্বাক্ষরিত আইডি কার্ড ও লাইসেন্স নিয়ে তারা অফিসিয়ালভাবে সার বিক্রির কাজ পরিচালনা করছেন।

তারা দাবি করেন, প্রকৃত খুচরা বিক্রেতারা সার সিন্ডিকেটের শিকার হয়ে আসছেন। যদি এই প্রথা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে সার সিন্ডিকেট চিরতরে নির্মূল হবে।

বিক্রেতারা জানান, তাদের সংগঠন “খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ” ২০১৩ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে টি.ও. লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে এবং ২০১৫ সালে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন পায়। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা “বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন” নামক সংগঠন আছে উল্লেখ করে তাদের পক্ষে মতামত দেয়নি। বিক্রেতারা দাবি করেন, দুই সংগঠনের নাম, কাঠামো ও উদ্দেশ্য ভিন্ন হওয়ায় তাদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।

তারা কৃষি সচিবের নিকট অনুরোধ জানান—২০১৮ সালের সংশ্লিষ্ট স্মারক পুনর্মূল্যায়ন করে তাদের অনুকূলে মতামত প্রদান ও দ্রুত টি.ও. নিবন্ধন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

শেষে বিক্রেতারা বলেন, “আমাদের আইডি কার্ড ও লাইসেন্স বহাল রেখে, অন্তত আগামী ২৫ অক্টোবর ২০২৫ সালের মধ্যে ‘খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর টি.ও. নিবন্ধন প্রদান করলে কৃষক ও খুচরা বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থই রক্ষা পাবে।”