ভূয়াছড়িতে ফুটবল উৎসব: শান্তি–সম্প্রীতি ও যুব উন্নয়নে সেনাবাহিনীর অনন্য উদ্যোগ

বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
‎‎পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ভূয়াছড়িতে অনুষ্ঠিত হলো বাঘাইহাট জোনের উদ্যোগে এক ব্যতিক্রমধর্মী ফুটবল টুর্নামেন্ট। বহুদিন পর খেলাধুলার এমন আয়োজন দেখে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো পাহাড়ি জনপদ।

‎দীর্ঘদিন ধরে ভূয়াছড়ি, কালুচোরা, ত্রিপুরাপাড়া ও কোজুইতলি পাড়ায় তরুণদের জন্য নিয়মিত খেলাধুলার সুযোগ ছিল না। এবার বাঘাইহাট জোনের ভারপ্রাপ্ত জোন কমান্ডার মেজর জিল্লুরের সরাসরি নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয় এই টুর্নামেন্ট। সকাল থেকেই ভূয়াছড়ি প্রাইমারি স্কুল মাঠে শিশু থেকে প্রবীণ পর্যন্ত সকল বয়সী মানুষের ভিড় দেখা যায়।

‎খেলা চলাকালে সেনাবাহিনীর সৌহার্দ্যপূর্ণ উপস্থিতি এবং খেলোয়াড়দের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে পুরো এলাকা হয়ে ওঠে এক মিলনমেলা। টুর্নামেন্ট শেষে বিকেলে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মেজর জিল্লুর বিজয়ী দলসহ অন্যান্য খেলোয়াড়দের হাতে উপহার, ফুটবল, জার্সি ও বিভিন্ন খেলাধুলার সামগ্রী তুলে দেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগ তরুণদের অনুপ্রাণিত করছে এবং তাদের ভুল পথ থেকে দূরে রাখছে। বিশেষ করে পাহাড়ে বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টার সময়ে খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যুব সমাজকে স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচকতার দিকে ফিরিয়ে আনছে।

‎একজন প্রবীণ পাহাড়ি বাসিন্দা বলেন, “আগে বাচ্চারা ঘরে থাকত, মাঠে কোনো আয়োজন হতো না। এখন সেনাবাহিনী আমাদের বাচ্চাদের খেলাধুলা, স্কুল, চিকিৎসা—সব দিকেই সাহায্য করছে। এই টুর্নামেন্ট আমাদের গ্রামে অনেক আনন্দ এনে দিয়েছে।”

‎মেজর জিল্লুর বলেন, পাহাড়ি মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি—এই তিন লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

‎পাহাড়ের মানুষের প্রত্যাশা—এ ধরনের সামাজিক উদ্যোগ আরও বৃদ্ধি পেলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা, শৃঙ্খলা ও সুস্থ বিনোদনের পরিবেশ আরও মজবুত হবে।