

মো. গোলামুর রহমান, লংগদু: রাংগামাটি জেলার লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহাজনপাড়া গ্রামের প্রায় ১২০ বিঘা জমিতে আবাদ করা হয়েছে সরিষার চাষ। এ যেনে ফসলি মাঠের বুকে দিগন্তজুড়ে বিছানো হলুদ রঙা কার্পেট। এতে হলুদের আভা ছড়াচ্ছে পুরো এলাকাজুড়ে।ফুলেল গন্ধে মৌমাছির আনাগোনাও ব্যাপক সেখানে।
মূলত ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে এবং কৃষকদের স্বল্প খরচে সফলতা পেতে রাংগামাটি জেলার লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহাজনপাড়া গ্রামে ব্যাপক হারে কৃষকদের সরিষা চাষ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানকার অসংখ্য কৃষক প্রায় ১৯ হেক্টর অর্থাৎ ১২০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন।সরিষা চাষের ফুলের সমরোহে সেই গ্রামের চিত্র বদলে গেছে। এলাকা পরিদর্শনেও নিয়মিত আসছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সখ করে অনেকেই ফটোসেশান করতেও আসছেন এখানটাতে।
মাঘ মাসের কুয়াশা রোদমাখা চোখে পড়বে এক ঝাক পাখিদের কিচিরমিচির ও ওড়াউড়ির, হলুদ-সবুজের নয়নাভিরাম দৃশ্যপট। সরিষা ফুলের ঘ্রাণ ফুসফুসের উপকার হয় বলে মানুষজন ক্ষেতজুড়ে ঘ্রাণ নিতেও ছুটে যান। অন্যদিকে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা।
সরিষা চাষী কৃষক পরামর্শ চাকমা বলেন, এবছর তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি বলেন,আগে আমি শুধু বোরো চাষ করতাম।এবারই প্রথম সরিষা চাষ করেছি। আশাকরি লাভবান হবো।
সরিষা চাষি মিটন চাকমা জানান, তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। গতবারের থেকে দিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।
আরেক কৃষক নীল কান্তিনচাকমা বলেন,কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই সময়ে সরিষা চাষ করেছি। সরিষাতে খরচ চার হাজার টাকার মতো হয় বিঘা প্রতি।ফলন তুলনা মুলক ভালো হয়, দামও ভালো পাওয়া যায়।তিনি আরো জানান, সরিষার কোনো কিছু ফেলা যায় না,গাছ খড়ি এবং খৈল গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
এ বিষয়ে কৃষি বিভাগ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলছেন, অন্যান্য চাষাবাদ থেকে সরিষা চাষ অনেকটাই সহজ। ওই এলাকার কৃষকেরা চাষের মৌসুমে বোরো ধান সহ তামাক আবাদ করতেন। এর মাঝে কিছু সংখ্যক জমি পতিত অবস্থায়ও থাকত। কিন্তু এবার তারা উন্নত জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। এতে আমনে বেশি ফলন পাওয়ার পাশাপাশি সরিষা চাষের কারণে আর্থিকভাবেও তারা লাভবান হবেন। কৃষকরা মাত্র ৭৫ দিনে সরিষা কেটে ফলন ঘরে তুলতে পারে। এতে করে ফলন নষ্ট হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নাই। উপজেলা কৃষি অফিস সর্বদা কৃষকদের পাশে আছেন।